ঝালকাঠি প্রতিনিধি ॥ ঝালকাঠিতে সাবালক সন্তান কে নাবালক সাজানোর পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের উত্তমপুর গ্রামের মো.হোসেন বাবুর বিরুদ্ধে। বাবুর স্ত্রী সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য শাহিনুর বেগম বলেন,আমার স্বামী মো.হোসেন বাবু সাথে ধর্ম মতে আমাদের বিয়ে হয়। অমাদের সংসার জীবনে একটি পুত্র সন্তান ৩০শে ডিসেম্বর ২০০১ জন্ম নেয়। ছেলের নাম রেখেছিলাম রিদয় আমম্মেদ ওরফে (পলক)। আমাদের বিবাহের পর থেকে একটি সুখী এবং সমৃদ্ধ দাম্পত্য জীবন গঠনে স্বামী স্ত্রী উভয়েরই সমান ভূমিকা ছিলও। কিন্তু সুখী দাম্পত্য জীবন গঠনে স্বামী-স্ত্রী দু‘জনেরই রয়েছে কিছু সতন্ত্র ভুমিকা। দাম্পত্য জীবনে আমরা দুইজনে মিলে আমাদের সন্তানের নামে এক একর ৭২ শতাংশ জমি ক্রয় করেছি ও বাড়িতে ঘরবাড়ি নির্মাণ সহ আসবাপত্র ক্রয় করেছি। আমাদের সংসার সুখেই কেটেছে। আমার স্বামী মো.হোসেন বাবুর বাড়ি ঢাকার ছিদ্দিক বাজার এলাকায়।
গত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ৪,৫,ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিক মহিলা ইউপি সদস্য হিসাবে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করি। আমার তিনটি ওয়ার্ডের জনগণের ভালো বাসায় বিপুল ভোটে আল্লাহর রহমতে জয়লাভ করেছি। নির্বাচন শেষে স্থানীয় কতিপয় লোকের সাথে আমার স্বামী বাবুর সাথে মারামারির ঘটনা ঘটে। এই মারামারির ঘটনার পর বাবু ছেলেকে সাথে নিয়ে ঢাকায় চলে যায়। এলাকায় লোকজনের ভয়ে ছেলেকেও ঢাকার স্কুলে ভর্তি করেছি সেখানে বাবার কাছে থাকে ও লেখাপড়া করে। কিন্তু বাবু ঢাকায় থাকা অবস্থায় তার চলাফেরা কাজ কর্ম ছিলও বাজে লোকের সাথে। বাসায় বসে ছেলের সামনে প্রায়ই বন্ধু বান্ধব নিয়ে নেশার আসর বসাতেন। ছেলে পলক আমাকে ফোনে বলতো আম্মু আজ আব্বু তার বন্ধুদের নিয়ে নেশায় বসেছে। বাবাকে দেখতে দেখতে অষ্টম শ্রেণিতে পড়–য়া ছেলে ও বাজে ছেলেদের সাথে চলাফেরা করা শুরু করেছে। আমার স্বামী মো.হোসেন বাবু একদিন দেখে ফেলে তার ছেলের সাথে আরো ২টি পাড়ার ছেলেকে নিয়ে নেশা করছে। ছেলেকে মারধর দিয়ে বাসা থেকে বেড় করে দেয় বাবু।
ছেলে রিদয় আহম্মদ পলক তখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। এরপর দেশের বাড়িতে চলে আসে ও আমার সাথে বাড়িতে থাকে। রিদয়কে স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিলাম কিন্তু সে স্কুলে ঠিকমত যায় না,বাজে ছেলেদের সাথে আড্ডা দেয়। অনেকবার নেশা করার সময় তাকে হাতেনাতে এলাকার লোকজনে ধরেছে। আমার নাম শুনে আবার ছেড়েও দিয়েছে। অনেক চেষ্টা করেছি তাকে ফেরানো যায়নি। ছেলেও বাবার মত নেশার জগতে চলে গেছে। বাবু দীর্ঘ ৪টি বছর ঢাকায় অবস্থান করে ও আমার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখেন। আমার ছেলে রিদয় আহমদ পলক সাথে যোগাযোগ ছিলও। বাবু মাসে মাসে ছেলেকে হাত খরচের জন্য টাকা পয়সা দিতো।
এ বছরের প্রথম থেকেই রিদয়কে তার বাবা প্রতিদিন ফোন করে,তোমার জমি বিক্রি করে টাকা নিয়ে আসো। আমার টাকার দরকার। আমি ঢাকায় ব্যবসা করব। এ কথা বলার পরে ছেলে আমাকে বলে মা,কি করবা আব্বু সামনের মাসে আসবে জমি বিক্রি করতে। তুমি তোমার নামে রেজিস্ট্রি করে নিয়ে ন্যায়ও। ছেলে কথা শুনে চিন্তা করে দেখলাম আসলেই তাই করতে হবে। তাই গত মাসের ২৪/০৯/২০২০ইং তারিখ রাজাপুর সাবরেজিষ্ট্রি অফিস থেকে আমার নামে ১ একর ৭২ শতাংশ দলিল করে দিয়েছে। যাহার দলিল নম্বর ১৪২৮ উক্ত দলিল মূলে রিদয়ের নামে ও তার বোন ফাতেমা আক্তার জুই কে ৮কাঠা ২৪ শতাংশ জমির রেজিস্ট্রি করে দিয়েছি।
শাহিনুর বেগম আরো জানায়,আমার নামে ছেলে জমি রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে বাবু শুনে গত এক সপ্তাহ আগে বাড়িতে আসে। আমার ঘরে আসেনি তিনি এলাকার মধ্যে অন্য এক বাড়িতে উঠে ছেলেকে নিয়ে ও এলাকার কিছু নষ্ট মানুষের কথায় ছেলে রিদয়কে নাবালক বানাবার পাঁয়তারা করছে। রিদয় আহমদ পলকের জন্ম সনদে তার জন্ম তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০০১ সনে। সেই হিসাবে রিদয়ের বর্তমান বয়স ১৮ বছর ৯মাস হয়েছে। কাগজ পত্রে তার জন্ম তারিখ পালটিয়ে নতুন জন্ম সনদ তৈরি করার পাঁয়তারা করছে। রিদয়ের বয়স কম করে বানিয়ে তাকে নাবালক বানানোর চেষ্টা করছে। এলাকার কিছু কু-রুচিপূর্ন অন্যর ক্ষতি করা যাদের নেশা ও পেশা। সেই ব্যক্তির সহায়তায় চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ভূয়া জন্ম সনদ তৈরি করে আমার ছেলেকে নাবালক বানানোর চেষ্টা করছে। নাবালক বানিয়ে আমার কাছ থেকে সেই জমি নিয়ে বিক্রি করবে। আমি একজন জন প্রতিনিধি আমি জানি বর্তমানে জন্ম সনদের মামলায় অনেক এলাকার চেয়ারম্যানরা জেলের ঘানি টানছেন। তিনি আরো বলেন,আমার ছেলেকে যারা নাবালক বানানোর পাঁয়তারা করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
Leave a Reply